সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু রোগের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এবার দেশের পোলট্রি শিল্পে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে ‘চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস’ (সিএভি) এর একটি নতুন ধরন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের জেনোটাইপ ‘এলএলএলবি’ স্ট্রেনটি সফলভাবে শনাক্ত ও চরিত্রায়ন করেছেন। এটি দেশের মুরগি পালনে মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ ভাইরাসের উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব না থাকলেও সম্প্রতি নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা দেশের পোলট্রি খাতের জন্য নতুন এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।
বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেনের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি সম্পন্ন করে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মারজানা আকতার।
গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য জার্নাল মাইক্রোবায়োলজি স্পেকট্রাম-এ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ড. গোলজার।
‘বাংলাদেশে মুরগির চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের আণবিক অনুসন্ধান ও জিনগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন বলেন, “সম্ভবত ব্রিডার ফ্লকে (বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত মুরগির ঝাঁক) নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন করার ফলে বিগত সময়ে বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না । ২০২৩ সালে নরসিংদী জেলার একটি বাণিজ্যিক ব্রয়লার খামারে হঠাৎ করে এ রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাদুর্ভাবের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই এটি নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করি।”
গবেষণা সম্পর্কে মারজানা আকতার বলেন, “আক্রান্ত মুরগিগুলোর মধ্যে রক্ত সল্পতা, ফ্যাকাশে ঝুঁটি ও নীলচে ডানার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। মুরগিগুলোর ময়নাতদন্ত করে দেখা যায়, বিভিন্ন অঙ্গ যেমন থাইমাস, প্লীহা, বার্সা, যকৃত এবং বোন ম্যারোতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। পরীক্ষাগারে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।”
তিনি বলেন, “পরবর্তীতে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং করে জানা যায়, ভাইরাসটি জেনোটাইপ এলএলএলবি প্রজাতির, যা আগে কখনো বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি। এই গবেষণার ফলাফল খামারিদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।”
অধ্যাপক ড. গোলজার এবং মারজানা আকতার বলেন, বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ভাইরাসটির জিনগত গঠন চীনের একটি স্ট্রেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা পোলট্রি আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাসটির বিভিন্ন প্রোটিনে, বিশেষ করে ভিপি৩ প্রোটিনে নতুন কিছু মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে, যা রোগের তীব্রতা ও ইমিউনোসাপ্রেশন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা বলেন, আমাদের দেশে বিদ্যমান চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি পূরণ ও ভাইরাসটির জিনোমিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কারণ, এই ভাইরাসে মুরগি আক্রান্ত হলে অন্যান্য রোগের প্রতি তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটে। তাই আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় ভাইরাস প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করতে চেয়েছি, যা ভবিষ্যতে টিকা উন্নয়ন, রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহায়ক হবে।
গবেষকদল মনে করেন, বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের নতুন এই জেনোটাইপের বিস্তার রোধে জাতীয় পর্যায়ে ভাইরোলজিক্যাল মনিটরিং, ব্রিডার ফ্লক ভ্যাকসিন আপডেট এবং খামার পর্যায়ে বায়োসিকিউরিটি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু রোগের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এবার দেশের পোলট্রি শিল্পে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে ‘চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস’ (সিএভি) এর একটি নতুন ধরন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের জেনোটাইপ ‘এলএলএলবি’ স্ট্রেনটি সফলভাবে শনাক্ত ও চরিত্রায়ন করেছেন। এটি দেশের মুরগি পালনে মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ ভাইরাসের উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব না থাকলেও সম্প্রতি নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা দেশের পোলট্রি খাতের জন্য নতুন এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।
বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেনের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি সম্পন্ন করে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মারজানা আকতার।
গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য জার্নাল মাইক্রোবায়োলজি স্পেকট্রাম-এ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ড. গোলজার।
‘বাংলাদেশে মুরগির চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের আণবিক অনুসন্ধান ও জিনগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন বলেন, “সম্ভবত ব্রিডার ফ্লকে (বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত মুরগির ঝাঁক) নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন করার ফলে বিগত সময়ে বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না । ২০২৩ সালে নরসিংদী জেলার একটি বাণিজ্যিক ব্রয়লার খামারে হঠাৎ করে এ রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাদুর্ভাবের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই এটি নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করি।”
গবেষণা সম্পর্কে মারজানা আকতার বলেন, “আক্রান্ত মুরগিগুলোর মধ্যে রক্ত সল্পতা, ফ্যাকাশে ঝুঁটি ও নীলচে ডানার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। মুরগিগুলোর ময়নাতদন্ত করে দেখা যায়, বিভিন্ন অঙ্গ যেমন থাইমাস, প্লীহা, বার্সা, যকৃত এবং বোন ম্যারোতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। পরীক্ষাগারে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।”
তিনি বলেন, “পরবর্তীতে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং করে জানা যায়, ভাইরাসটি জেনোটাইপ এলএলএলবি প্রজাতির, যা আগে কখনো বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি। এই গবেষণার ফলাফল খামারিদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।”
অধ্যাপক ড. গোলজার এবং মারজানা আকতার বলেন, বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ভাইরাসটির জিনগত গঠন চীনের একটি স্ট্রেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা পোলট্রি আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাসটির বিভিন্ন প্রোটিনে, বিশেষ করে ভিপি৩ প্রোটিনে নতুন কিছু মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে, যা রোগের তীব্রতা ও ইমিউনোসাপ্রেশন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা বলেন, আমাদের দেশে বিদ্যমান চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি পূরণ ও ভাইরাসটির জিনোমিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কারণ, এই ভাইরাসে মুরগি আক্রান্ত হলে অন্যান্য রোগের প্রতি তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটে। তাই আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় ভাইরাস প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করতে চেয়েছি, যা ভবিষ্যতে টিকা উন্নয়ন, রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহায়ক হবে।
গবেষকদল মনে করেন, বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের নতুন এই জেনোটাইপের বিস্তার রোধে জাতীয় পর্যায়ে ভাইরোলজিক্যাল মনিটরিং, ব্রিডার ফ্লক ভ্যাকসিন আপডেট এবং খামার পর্যায়ে বায়োসিকিউরিটি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু রোগের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এবার দেশের পোলট্রি শিল্পে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে ‘চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস’ (সিএভি) এর একটি নতুন ধরন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের জেনোটাইপ ‘এলএলএলবি’ স্ট্রেনটি সফলভাবে শনাক্ত ও চরিত্রায়ন করেছেন। এটি দেশের মুরগি পালনে মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ ভাইরাসের উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব না থাকলেও সম্প্রতি নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা দেশের পোলট্রি খাতের জন্য নতুন এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।
বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেনের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি সম্পন্ন করে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মারজানা আকতার।
গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য জার্নাল মাইক্রোবায়োলজি স্পেকট্রাম-এ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ড. গোলজার।
‘বাংলাদেশে মুরগির চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের আণবিক অনুসন্ধান ও জিনগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন বলেন, “সম্ভবত ব্রিডার ফ্লকে (বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত মুরগির ঝাঁক) নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন করার ফলে বিগত সময়ে বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না । ২০২৩ সালে নরসিংদী জেলার একটি বাণিজ্যিক ব্রয়লার খামারে হঠাৎ করে এ রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাদুর্ভাবের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই এটি নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করি।”
গবেষণা সম্পর্কে মারজানা আকতার বলেন, “আক্রান্ত মুরগিগুলোর মধ্যে রক্ত সল্পতা, ফ্যাকাশে ঝুঁটি ও নীলচে ডানার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। মুরগিগুলোর ময়নাতদন্ত করে দেখা যায়, বিভিন্ন অঙ্গ যেমন থাইমাস, প্লীহা, বার্সা, যকৃত এবং বোন ম্যারোতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। পরীক্ষাগারে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।”
তিনি বলেন, “পরবর্তীতে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং করে জানা যায়, ভাইরাসটি জেনোটাইপ এলএলএলবি প্রজাতির, যা আগে কখনো বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি। এই গবেষণার ফলাফল খামারিদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।”
অধ্যাপক ড. গোলজার এবং মারজানা আকতার বলেন, বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ভাইরাসটির জিনগত গঠন চীনের একটি স্ট্রেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা পোলট্রি আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাসটির বিভিন্ন প্রোটিনে, বিশেষ করে ভিপি৩ প্রোটিনে নতুন কিছু মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে, যা রোগের তীব্রতা ও ইমিউনোসাপ্রেশন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা বলেন, আমাদের দেশে বিদ্যমান চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি পূরণ ও ভাইরাসটির জিনোমিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কারণ, এই ভাইরাসে মুরগি আক্রান্ত হলে অন্যান্য রোগের প্রতি তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটে। তাই আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় ভাইরাস প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করতে চেয়েছি, যা ভবিষ্যতে টিকা উন্নয়ন, রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহায়ক হবে।
গবেষকদল মনে করেন, বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের নতুন এই জেনোটাইপের বিস্তার রোধে জাতীয় পর্যায়ে ভাইরোলজিক্যাল মনিটরিং, ব্রিডার ফ্লক ভ্যাকসিন আপডেট এবং খামার পর্যায়ে বায়োসিকিউরিটি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে। কিন্তু রোগের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির ঝুঁকিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এবার দেশের পোলট্রি শিল্পে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে ‘চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস’ (সিএভি) এর একটি নতুন ধরন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের জেনোটাইপ ‘এলএলএলবি’ স্ট্রেনটি সফলভাবে শনাক্ত ও চরিত্রায়ন করেছেন। এটি দেশের মুরগি পালনে মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ ভাইরাসের উল্লেখযোগ্য প্রাদুর্ভাব না থাকলেও সম্প্রতি নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যা দেশের পোলট্রি খাতের জন্য নতুন এক উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।
বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেনের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি সম্পন্ন করে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মারজানা আকতার।
গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান সোসাইটি ফর মাইক্রোবায়োলজি থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য জার্নাল মাইক্রোবায়োলজি স্পেকট্রাম-এ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ড. গোলজার।
‘বাংলাদেশে মুরগির চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের আণবিক অনুসন্ধান ও জিনগত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি সম্পন্ন হয়। গবেষণাটির অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন বলেন, “সম্ভবত ব্রিডার ফ্লকে (বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত মুরগির ঝাঁক) নিয়মিত ভ্যাকসিনেশন করার ফলে বিগত সময়ে বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের তেমন প্রাদুর্ভাব ছিল না । ২০২৩ সালে নরসিংদী জেলার একটি বাণিজ্যিক ব্রয়লার খামারে হঠাৎ করে এ রোগের প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া যায় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাদুর্ভাবের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই এটি নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করি।”
গবেষণা সম্পর্কে মারজানা আকতার বলেন, “আক্রান্ত মুরগিগুলোর মধ্যে রক্ত সল্পতা, ফ্যাকাশে ঝুঁটি ও নীলচে ডানার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। মুরগিগুলোর ময়নাতদন্ত করে দেখা যায়, বিভিন্ন অঙ্গ যেমন থাইমাস, প্লীহা, বার্সা, যকৃত এবং বোন ম্যারোতে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। পরীক্ষাগারে সংগৃহীত নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাইরাসটির উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।”
তিনি বলেন, “পরবর্তীতে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং করে জানা যায়, ভাইরাসটি জেনোটাইপ এলএলএলবি প্রজাতির, যা আগে কখনো বাংলাদেশে শনাক্ত হয়নি। এই গবেষণার ফলাফল খামারিদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।”
অধ্যাপক ড. গোলজার এবং মারজানা আকতার বলেন, বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই ভাইরাসটির জিনগত গঠন চীনের একটি স্ট্রেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা পোলট্রি আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাসটির বিভিন্ন প্রোটিনে, বিশেষ করে ভিপি৩ প্রোটিনে নতুন কিছু মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে, যা রোগের তীব্রতা ও ইমিউনোসাপ্রেশন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা বলেন, আমাদের দেশে বিদ্যমান চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাস সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি পূরণ ও ভাইরাসটির জিনোমিক বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করাই ছিল এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কারণ, এই ভাইরাসে মুরগি আক্রান্ত হলে অন্যান্য রোগের প্রতি তাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং খামারিদের অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটে। তাই আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় ভাইরাস প্রজাতির জিনোম বিশ্লেষণের মাধ্যমে এমন একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তৈরি করতে চেয়েছি, যা ভবিষ্যতে টিকা উন্নয়ন, রোগ নির্ণয়ের নির্ভুলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সহায়ক হবে।
গবেষকদল মনে করেন, বাংলাদেশে চিকেন অ্যানিমিয়া ভাইরাসের নতুন এই জেনোটাইপের বিস্তার রোধে জাতীয় পর্যায়ে ভাইরোলজিক্যাল মনিটরিং, ব্রিডার ফ্লক ভ্যাকসিন আপডেট এবং খামার পর্যায়ে বায়োসিকিউরিটি জোরদার করা এখন সময়ের দাবি।
এখনও কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!